স্বাধীনতার সূর্য সন্তান শহীদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে প্রতিটা জেলা-উপজেলায় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন চাই‌। এই দাবীকে সামনে রেখে স্বাধীনতার প্রথম সরকার গঠনের ঐতিহাসিক স্থান মুজিব নগর স্মৃতিসৌধে ২৬ শে মার্চ বিকেলে আহ্বয়ক কমিটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

মুজিব নগরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে বাংলা একাডেমী থেকে কাথা সাহিত্যিক পুরস্কার প্রাপ্ত অধ্যপক রফিকুর রশিদের দিকনির্দেশনা ও মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন সময়ের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা কারি অধ্যপক আব্দুল্লাহ আল আমিন ধুমকেতুর সঞ্চালনায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ডিন ড.লুৎফুল কবির এর জৈস্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ইকরামুল কবির বাবুলকে আহ্বায়ক (কক্সবাজার) এবং যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে কথাসাহিত্যিক , অধ্যপক রফিকুর রশীদ (মেহেরপুর), বীর মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যক্ষ খন্দক হাফিজ ফারুক (ঝিনাইদহ), গবেষক ও অধ্যপক আবদুল্লাহ আল আমিন ধুমকেতু (মেহেরপুর), মীর দিনার হোসেন (যশোর), সদস্য সচিব হিসেবে মির্জা গালিব উজ্জ্বল (মেহেরপুর), আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম কার্যকরী সদস্য
এনামুল হক এনাম (চিটাগং), কামরুন্নেছা তানিয়া গত (কক্সবাজার),অধ্যাপক গৌতম বসু (ঝিনাইদহ), কুটু জোয়াদ্দার (ঢাকা), সালেহ কাজল (ঢাকা), অভিজিৎ বসু (মেহেরপুর) তরিকুল ইসলাম( ঢাকা ) সকলের মতামত এর মধ্যে দিয়ে সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়।
এই সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ১৯৭১ সালে গঠিত “বৈদ্যনাথতলা সংগ্রাম কমিটি”র আহ্বায়ক ও মুজিব নগর সরকার গঠনের অন্যতম প্রতক্ষ্যদর্শি বয়সের কাছে হার না মানা ব্যাক্তিত্ব অসুস্থ অবস্থায় উপস্থিত ছিলেন দোয়াজউদ্দিন মন্ডল (মাস্টার)।
ইতিহাসের অন্যতম মুহূর্তে “বঙ্গবন্ধু ও মুজিব নগর” স্মৃতি বিজড়িত লেখা ব‌ই তুলেদেন নিজের লেখা ব‌ই লেখক কথাসাহিত্যিক অধ্যপক রফিকুর রশীদ রিজভী আহ্বায়ক ইকরামুল কবির বাবুল সাহেবের হাতে।

সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন এর সাথে একমত হয়ে উপস্থিত ছিলেন, হাসানুজ্জামান রিপন, মোঃ স্বপন আলী, মোঃ শিমুল বিশ্বাস, ইব্রাহিম খান, হাসিবুল ইসলাম, আসলাম , রাজু আহমেদ, ইমরান হোসেন, আবু তালহা বিন হাবিব জুয়েল, আব্দুর রহিম, নয়ন আহামেদ প্রমুখ।


সঞ্চালক হিসেবে আব্দুল্লাহ আল আমিন ধুমকেতু বলেন বধ্যভূমি গুলতে শহীদের স্মরণে স্তম্ভ থাকলেও জেলা বা উপজেলা শহর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মহান বিজয় দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসে ৩০ লক্ষ্য শহীদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে কোনো স্মৃতিসৌধ নেই ‌। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ভাষা শহীদদের স্মরণে জাতীয় শহীদ মিনারের আদলে প্রতিটি স্তরে শহীদ মিনার আছে। এই ক্ষেত্রে কোনো কোনো প্রতিস্ঠান পুস্পস্তবক অর্পণ করছেন ভাষা শহীদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারে। জাতি হিসাবে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধকে সবসময় শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সেই লক্ষ্য কথা সাহিত্যিক ও অধ্যপক রফিকুর রশিদ বলেন ‘বাংলাদেশ জেলা ভিত্তিক স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন’ এর নাম পরিবর্তন করে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে ” সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন” নামে সাংগঠনটির নামকরণ করা হোক । তাহলে সকল স্তরে এই আন্দোলন এর অনুভব মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে মন্তব্য করেন। উপস্থিত সকলে যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক রফিকুর রশিদ এর প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন করেন সকলে। নতুন নামকরণ ঠিক হয় ”সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন”।

আহবায়ক ইকরামুল কবির বাবলু বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসে বিক্ষিপ্ত আকারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়, যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জা জনক। অবিলম্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকারের নিকট দেশের প্রতিটা জেলা, উপজেলা এমনকি শিক্ষাঙ্গনগুলোতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন চান।

যুগ্ম আহবায়ক ও বাংলা একাডেমীর পদক প্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুর রশীদ বলেন এই আন্দোলন দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ছায়ের স্তর পড়েছে এখন পরিস্কার করার কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে ধর্মন্ধতা থেকে মুক্তি দিতে হবে । ইতিহাস সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধকে সঠিক ভাবে উপস্থাপন না করতে পারলে, হয়নার দলেরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে ফেলবে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি এখনো রাস্ট্র পরিচালনায় আছে উচিৎ নতুন প্রজন্মের কাছে শহীদ মিনার কি? আর স্মৃতিসৌধ কি? এর পার্থক্য তুলে ধরা। তিনি বলেন স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন হোক এ সরকারের মাধ্যমে। সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন চেয়ে একমত পোষন করেন এই বিশিষ্ট ব্যাক্তিত্য।


যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ হাফিজ ফারুক বলেন, সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলনের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এই আন্দোলন একটি চলমান আন্দোলন। শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধ এক নয়; এর ভিন্নতা উপলব্ধিতে আনতে হবে।


সদস্য সচিব মির্জা গালিব উজ্জ্বল বলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে প্রতিটি জেলায় , উপজেলায় , শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী প্রজন্মের কাছে শ্রদ্ধা ও বিনম্র সন্মান জাতী হিসাবে মাথার মুকুট করে রাখার যে প্রচেষ্টা আজ একটি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের মাটি থেকে শুরু হলো সেই কার্যক্রমের সাথে আসুন হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তুলি জাতীয় বীর শহীদদের স্মরণে প্রতি জেলা উপজেলায় স্মৃতিসৌধ চাই।

পরিশেষে দল,মত, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত থেকে শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকারের নিকট সর্বস্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়নের দাবী জানাচ্ছি।